কী খবর সবার, প্রিয় শার্ক ট্যাং বোদ্ধারা? সরাসরি কাজের কথায় আসি, এপিসোড ২ কি প্রথমটার চেয়েও ভালো? দেখেই প্রথমে যে শব্দটা মাথায় এসেছে- “ব্যাম!” এটা আগেরটার চেয়েও এক ধাপ এগিয়ে! শক্ত হয়ে বসুন সবাই, শার্ক ট্যাংকের ঝড় আসছে সব উড়িয়ে নিতে!
ট্যাংকে নতুন শার্ক- সামানজার খান
প্রথমেই, পরিচয় করিয়ে দিই নতুন শার্কের সাথে, সামানজার খান। স্পয়লার অ্যালার্ট- উনি কিন্তু দারুণ! প্রখর সেন্স অফ হিউমার, সোজাসাপটা আলাপ- শার্ক ট্যাংকে তুলছেন প্রতিভার ঝড়! বাকি শার্করা সরে দাঁড়ান, নতুন এই শার্ক আসছেন মঞ্চ মাতাতে!
“এস্টিলো”র গ্র্যান্ড এনট্র্যান্স
হ্যালো বন্ধুরা! আসছে এস্টিলো, তাদের লক্ষ্য- সবার জন্য বিস্পোক বা কাস্টম মেইড চামড়ার প্রডাক্ট ডেলিভার করা। তাদের অফার, ৪৫ লাখ টাকার বদলে কোম্পানির ১৩.৫% ইক্যুইটি। তারা ব্যাবসা করছে ৩ বছর ধরে, ১ কোটির উপর রেভিনিউ- ব্যবসাটা তারা ভালোই করছে। কিন্তু এটা কি আমাদের শার্কদের মন জয় করার জন্য যথেষ্ট? দেখা গেলো, তাদের কাস্টমার-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম, যা সত্যিকার অর্থেই বিস্পোক প্রডাক্ট ডিজাইন করতে পারে- ব্যাপারটা প্রায় সব শার্কদেরই মুগ্ধ করেছে। কিন্তু, একজন বাদে…
আমাদের প্রিয় সামানজার খেয়াল করলেন প্রতিযোগীরা নারী কাস্টমারদের জন্য কোনও প্রডাক্ট অফার করছেন না। তার উপর নিজেদের প্রডাক্টকে একইসাথে সাশ্রয়ী এবং প্রিমিয়াম বলা- এটা কীভাবে সম্ভব? সামানজারের মন গলল না। যদিও দুজন শার্ক আগ্রহী হলেন, আলাপ বাড়ালেন, কিছুক্ষণ দরকষাকষির পর, এস্টিলোর সাথে ডিল হলো- ১৫ লাখ টাকা ক্যাশ, ১০ লাখ টাকা ইন্টারেস্ট-ফ্রী লোন, সাথে ২০ লাখ টাকা সমমূল্যের টেকনিক্যাল ও অ্যাডভার্টাইজিং সাপোর্ট। এর বিনিময়ে তারা শার্কদের দিলো তাদের কোম্পানির ২০% ইক্যুইটি। এই দারুণ ডিলটা এসেছিল গোলাম এবং ফারহানের কাছ থেকে। ভালোই করেছ, ছেলেরা!
“সঠিক এআই” এর প্রযুক্তির জোয়ার
এরপর আসছে, সঠিক এআই দলের টেক জিনিয়াসেরা! এই মেধাবী তরুণেরা একটা জেনারেটিভ এআই রাইটিং প্ল্যাটফর্ম বানাচ্ছে, যাতে বাংলা ব্যাকরণ এবং টেক্সট রাইটিং সল্যুশান থাকবে। একটা বিখ্যাত বাংলা গান গেয়ে তারা অভিনব পিচের শুরু করে। এটার প্রশংসা তো করতেই হয়!
কিন্তু এখন কাজের আলাপ। প্রতিযোগীরা যেভাবে দাবি করছে, সঠিক এআই কি সত্যিই এতোটা কার্যকর? সত্যি বলতে, নাহ! তাদের দুর্বল বিজনেস মডেল এবং একটা অস্পষ্ট ভিশানের কারণে, সঠিক এআই এর পিচটা শার্কদের প্রশ্নের ঢেউ সামলে উঠতে পারেনি। তারা এখন বুঝতে পারছে, টেক জগতে সফল হওয়াটা এতোটাও সহজ না।
“স্টিক-অন!” এর বুদ্ধিমত্তা
আমাদের তৃতীয় প্রতিযোগী, “স্টিক-অন!” নিজেদেরকে পারসোনালাইজড ফোন কাভারের পথিকৃৎ হিসেবে দাবি করে। তাদের চাওয়া? ১৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১৩% ইক্যুইটি। বেশি হয়ে গেছে? হয়তো, কিন্তু “স্টিক-অন!” এর ব্যাপারে জানারও অনেক কিছু আছে। সদ্য ভার্সিটি গ্র্যাজুয়েট এই তরুণেরা পারিবারিক ব্যবসাকে কাজে লাগিয়ে পরিশ্রম করে যাচ্ছে, নিজেদের একটা নাম করার লক্ষ্যে।
সামানজার, আমাদের প্রখর-দৃষ্টির শার্ক এবারও সন্দিহান। “স্টিক-অন!” এর “ইউনিক সেলিং পয়েন্ট” বা ইউএসপি তাঁর কাছে আসলে, অতোটাও ইউনিক লাগে নি। তারপরও, বেশ কঠিন এক দরকষাকষির পর, তারা ফাহিম এবং মুর্শেদের কাছ থেকে একটা ডিল আদায় করতে সফল হয়েছে।
আর যে ডিলটাই না পেলো! এটাকে ডিল বলবো না কি সোনার খনি? তারা ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে শার্কদের কাছ থেকে পাচ্ছে ১৫ লক্ষ টাকা, ভাবা যায়? আর এই টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দিতে হচ্ছে কোম্পানির মাত্র ২০ ভাগ শেয়ার। চুক্তিটা খারাপ হয়নি, বলতেই হচ্ছে। কোম্পানির সিংহভাগ রয়ে গেলো, আবার পার্টনার হিসেবে ফাহিম এবং গোলামের মত দুজন দুর্দান্ত শার্ক! শুধু একটাই ছোট্ট শর্ত, ১৮ মাসের মধ্যে রয়্যালটি হিসেবে ৫ লাখ টাকা ফেরত দিতে হবে। তারপরও, দারুণ ডিল তো বটেই!
“পালসটেক”এর নিরলস প্রচেষ্টা
সবশেষে, আসছে পালসটেক, ফার্মেসির জন্য একটা নতুন হোলসেইল ই-কমার্স মডেল। তারা ইনভেনটরি ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে ডেলিভারি সার্ভিস প্রদান করে থাকে। সবচেয়ে বড়ো ব্যাপার, তাদের সাথে এর মধ্যেই যোগ দিয়েছে ৪০০০ ফার্মেসি! ওয়াও!
কিন্তু তাদের “সব কাজের কাজী” এই মডেলটা কি পারবে শার্কদের আগ্রহ তৈরি করতে? দেখা গেলো, হ্যাঁ! পেরেছে! তারা সামানজারের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকার বদলে ৫% ইক্যুইটির এক অবিশ্বাস্য ডিল নিয়ে ট্যাংক থেকে বেরুলো! এর চেয়েও বড়ো চমক- তারা যদি এই ৩০ লাখ টাকা ১২ মাসের মধ্যে ফেরত দিতে পারে, সামানজার তাঁর ইক্যুইটি ৫% থেকে ১% এ নামিয়ে আনবেন! এরকম ডিল কি কখনও পাওয়া যায়?!
তো, তৈরি হয়ে নিন, শার্ক ফ্যানরা, এপিসোড ২ দারুণ সব পিচ নিয়ে অপেক্ষা করছে, আমাদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে চলেছে। শক্ত করে ধরে বসবেন, প্রতিটা পর্বেই সাগর আরও উত্তাল হচ্ছে!