অলরাইট, বঙ্গতে শার্ক ট্যাংকের লোকাল ভার্সনের প্রিমিয়ার শো আমি দেখেছি। এবং সত্যি বলতে, স্কুলে বায়োলজি ক্লাসে যেভাবে আমরা ব্যাঙের ব্যবচ্ছেদ করতাম, ঠিক সেভাবেই দেখেছি। সিরিয়াসলি, আমি অলরেডি শো টা তিনবার দেখেছি। আর এখন আমি আপনাদের সামনে ফাইন্ডিংস গুলো বিস্তারিত তুলে ধরব ।
প্রথমেই, আসুন প্রোডাকশন কোয়ালিটির কথা বলি। এটি তো একটি বিশাল বড় গ্লোবাল শো, তাই না? তাই, স্বাভাবিকভাবেই, আমরা সবাই দেখতে চাই যে বঙ্গ সেই মান ধরে রাখতে পারে কিনা। কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন? রিসোর্স এবং প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা যে অবস্থায় আছি , আমি বলব বঙ্গ বেশ ভালোভাবেই সেই কাজটা করতে পেরেছে। বলতে চাচ্ছি যে, কে ভেবেছিল বাংলাদেশি ক্রুরা এমন দারুন কিছু করে দেখাতে পারে? শুধু সেট ডিজাইনের কথাই যদি বলি, আয়োজন দেখে মনে হয়েছে এটি বিশাল। হ্যাঁ, উন্নতির জায়গা অবশ্যই আছে, বিশেষ করে ক্যামেরা ডিপার্ট্মেন্টে। কিন্তু ভুলে যেয়েন না, রোম কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি।
এখন, পিচের কথায় আসি! বুকশনারি দিয়ে শুরু হয়েছে, এবং বলতেই হবে, বই পড়ুয়াদের মাঝে তাদের একটি বিশাল ফ্যানবেজ রয়েছে। আমি নিজেও তাদের কাছ থেকে বই কিনেছি। এর পিছনে যে ব্যাক্তিটি আছেন তার পিচ এ শার্ক ট্যাঙ্কের কেউ টুকটাক সাহায্য করে থাকতে পারে কিন্তু তার পিচ ছিলো একদম অন পয়েন্ট, শার্কদের দেখে মনে হচ্ছিলো অত্ উৎসাহী, বিশেষ করে নাজিম ফারহান চৌধুরী এবং সামি আহমেদ। লোভনীয় খাবার দেখলে আমাদের ভেতর যেমন খাওয়ার ইচ্ছা জাগে তাদের দেখেও ঠিক তেমনই মনে হচ্ছিলো। তারা আসলে সাহায্য করার জন্য এক হাত বাড়িয়েই রেখেছিলেন? অনেকটা সেইসব সাহায্যকারী প্রতিবেশীর মতো, যারা চিনি বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে সাহায্য করে, তবে এই ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করেছেন নগদ টাকা দিয়ে।
এরপর, কুকলি, সুগার ফ্রি সুপারহিরো। মানে, আমি ওর প্রোমো ভিডিও দেখেছি ,আমার মনে হয়েছে ও স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স এর ব্যাটম্যান, যে চিনির ক্ষতিকর দিকগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।ওর প্রোডাক্টের টেস্ট শার্কদের খুব ভাল লাগে। যদিও সামি ডিল করেন নি (প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ), বাকীরা ক্ষুধার্ত শার্কের মতোই আগ্রহ দেখাচ্ছিল… কি বলতে চাচ্ছি বুঝতেই পারছেন! শেষ পর্যন্ত, ওদের একটা সুইট ডিল হয়, এবং আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে , ভবিষ্যতে স্ন্যাক ব্যবসায় কুকলি রাজত্ব করবে ।
এরপর আসে ইকোকাটলার, কাঠ বাশের কাটলারি দিয়ে সজ্জিত একজন পরিবেশ যোদ্ধা। মহৎ একটা উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে আগালেও, তাদের ভ্যালুয়েশন… বলা যায়, একটু অপ্টিমিস্টিক। ওদের কোন ডিল হয়নি, কিন্তু তারপরও,, আমরা সবাই পিচিং এবং তার প্রস্তুতি সম্পর্কেতো কিছু শিখেছি, তাই না?
শেষ পিচ, বিউটি সলিউশন। তাদের প্রেসেণ্টেশন দেখে মনে হচ্ছিলো এই জায়গা যেন তার চিরচেনা। ডালিয়া যেন স্থির এক জলতরঙ্গে মাথা উচু করে ভেসে থাকা এক জলপদ্ম এবং শার্করাও তার এন্ট্রি এবং প্রেজেন্টেশন মুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন।ওর সেলসের পরিসংখ্যান শার্কদের আগ্রহী হতে বাধ্য করেছে।অ্যান্টিক পন্যের নিলামে যেমন বিডিং এর ঝড় বয়ে যায় , স্কিনকেয়ার পন্যের জন্য শার্করা সেভাবেই ডিল করেছেন ।
সামগ্রিকভাবে, প্রথম পর্বটি ছিল উদ্যোক্তা এবং অদ্ভুত সব নেগোসিয়েশনের একটা রোলারকোস্টার,আর আমি প্রতিটি মিনিট দারুণ উপভোগ করেছি। আপনি যদি এখনো না দেখে থাকেন তাহলে আর দেরি করবেন না । এখনই চলে যান বঙ্গ”তে আর দেখে ফেলুন শার্ক ট্যাংক। আমি নিশ্চিত, আপনাদের ভালো লাগবে।