রবিবার, আগস্ট 10, 2025
spot_imgspot_img
Home Blog

শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ এপিসোড ৪ রিক্যাপ- উচ্চাকাঙ্ক্ষী পিচ আর অবিশ্বাস্য সব ডিল

আমি মাত্রই শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ-এর এপিসোড ৪ দেখা শেষ করলাম। সময় কোনদিকে যে গেলো, টেরই পেলাম না! রিলিজের সাথে সাথে দেখতে না পারায় অস্থির হয়ে ছিলাম, যে আমার আগে সবার দেখা শেষ! শেষমেশ আজ সকালে দেখে মন ঠাণ্ডা করলাম। আচ্ছা একটু খুলেই বলি।  

প্রথমেই ট্যাংকে হাজির “রোবোওয়ে,” মানবাকৃতির/হিউম্যানয়েড একটা রোবট নিয়ে। একটা বার ভেবে দেখুন, বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া কয়েকটা ছেলে, যেখানে প্রযুক্তি নিয়ে এতো চ্যালেঞ্জ, এতো বাধাবিপত্তি, সেখানে আস্ত একটা রোবট বানিয়ে ফেলেছে! আর রোবটটা দেখতেও দারুণ! এটাকে ডিজাইন করা হয়েছে একটা ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিশেবে। ঠিকমতো কাজ করলে সার্ভিস সেক্টরে একটা ঝড় তুলবে এই রোবট। তার উপর এটার মধ্যে ফেশিয়াল রেকগনিশান সফটওয়্যারও দেয়া আছে! তাদের চাওয়া ছিলো কোম্পানির ৮% শেয়ারের বদলে ২৫ লাখ টাকা। গোলাম মুর্শেদ কাছ থেকে দেখার জন্য রোবটটার সামনে যাওয়ার পর তো আরেক মজার কাহিনী! রোবটটা উলটোপালটা নাম্বার বলতে শুরু করলো! উফ, কাজের সময়েই গ্লিচ? কিন্তু যখন মুর্শেদ বাংলাদেশের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন, রোবট ভাই গড়গড় করে সব বলতে শুরু করলো। মুর্শেদের সাথে হ্যান্ডশেইক পর্যন্ত করলো! কিন্তু দিনশেষে, তাদের প্রডাক্টটা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় কোনও শার্কই ইনভেস্ট করেননি, তবে তাদেরকে আগামী সিজনে আরও পরিণত একটা রোবট নিয়ে আসার জন্য উৎসাহ দিলেন। ডিল না হলেও আমরা দারুণ একটা পিচ দেখতে পেলাম, তাদের উদ্ভাবন আর সম্ভাবনার কথা জানতে পারলাম- শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের মজাই তো এটা, না কি?

এরপর, ট্যাংকে এলো “প্যারেন্টস কেয়ার।” সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপারটা হচ্ছে ফাউন্ডার তার মাকে নিয়ে এসেছেন। নিজের বৃদ্ধা মাকে সেবাযত্ন দেয়ার চিন্তা থেকেই তার এই বয়স্কদের সেবা দেয়ার কোম্পানির শুরু। নার্স আর ন্যানিদের একটা দক্ষ দল নিয়ে তিনি তিন বছর ধরে কোম্পানি চালাচ্ছেন। তাদের চাওয়া ৪% ইক্যুইটির বদলে ৫০ লাখ টাকা। যদিও তারা মাসে ১৭ লাখ টাকা কামাচ্ছেন, সেখান থেকে প্রফিট আসছে মাত্র ৬০ হাজার। ব্যাপারটা নিয়ে সামি বেশ কঠিন প্রশ্ন করলেন। আমাদের উদ্যোক্তা বোঝালেন, কীভাবে সময়ের সাথে সাথে তার ব্যবসার ভ্যাল্যুও বাড়বে। লিওন কিছুটা আগ্রহী হলেও পরে সরে গেলেন। শেষমেশ, সামি একটা অফার করলেন- ২৫ লাখ টাকার বদলে ৪% ইক্যুইটি, সাথে লোন হিশেবে আরও ২৫ লাখ টাকা, যেটার শর্ত ঠিক করে দেবে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। ডিলটা তো ভালোই, না?    

তারপর এলো “রিভাইভাল বাংলাদেশ,” তিনজন ফাউন্ডার আর তিনজন কারিগর নিয়ে। তারা দেখালেন ফ্যাশান দিয়েই কীভাবে বাংলাদেশের ঐতিহ্য রক্ষা করে যাচ্ছেন। ১% ইক্যুইটির বদলে তারা চাইছেন ২৫ লাখ টাকা। তাদের বিজনেস এখনও আইডিয়া স্টেইজে, প্রডাকশানের ব্যাপারস্যাপারও এখনও সেভাবে ঠিক হয়নি- অন্যের ফ্যাক্টরিতে প্রডাক্ট তৈরি করছেন। শার্করা এজন্যই সন্দিহান, বিজনেস মডেল বা লাভ করার উপায় নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন করে গেলেন। ফাউন্ডারদের উদ্দেশ্য ভালোই ছিলো, একটা প্রকৃতিবান্ধব ফ্যাশান ব্র্যান্ড তৈরি করা- কিন্তু শার্কদের মন শুধু এটুকুতেই গলল না। গোলাম মুর্শেদের একটু আগ্রহ থাকলেও পরে আর ইনভেস্ট করলেন না। লিওনের হঠাৎ প্রশ্ন, “আপনারা কাউবয় হ্যাট বানান?”- স্বভাবসুলভ ঠাট্টা করে পরিস্থিতি একটু হালকা করলেন। কিন্তু আফসোস, তাদের খালি হাতেই ফিরে যেতে হলো।

সবশেষে, “পালকি মোটরস” নিয়ে ট্যাংকে এলেন অভিজ্ঞ উদ্যোক্তা মোস্তফা, তার লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে সাশ্রয়ী ইলেকট্রিক কার বানানো। এই দুর্দান্ত পিচে তিনি কথা বললেন তার গাড়ির বিল্ড নিয়ে, একটা সাধারণ সিএনজি ট্যাক্সির চেয়ে গাড়িটা কতোটা সাশ্রয়ী সেটাও জানলাম, তার দক্ষ দলের ব্যাপারেও শুনলাম। তার পিচ আর প্রডাক্টের ব্যাপারে শুনে শার্করা তো তখনই স্টুডিওর বাইরে নেমে গেলেন, গাড়িটা কিছুক্ষণ চড়ে দেখলেন। সবাই একদম মুগ্ধ! তারপর ট্যাংকে ফিরে শুরু হলো বিস্তারিত আলাপ- গাড়ির কতোটুকু দেশে বানানো হচ্ছে, কতোগুলো অর্ডার পেয়েছেন, প্রফিট কেমন থাকছে, আরও কতোকিছু। মোস্তফারাই আসলে বাংলাদেশের ইভি (ইলেকট্রিক ভিহিক্যাল) মার্কেটের সত্যিকারের অগ্রদূত। লিওন একটা অফার করেছিলেন ঠিকই, কিন্তু তারা রাজি হলেন না। ঠিক পরপরই সামি বরাবরের মত একটা ডিল নিয়ে এগিয়ে এলেন। তিনি ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিশেবে এক কোটি টাকার লোন অফার করলেন, যেটা ভাগ ভাগ করে দেয়া হবে, এবং এই লোনের শর্ত ঠিক করে দেবে সামি’র কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। লিওনের ডিলে রাজি না হলেও মোস্তফা এই ডিল নিতে সময় নিলেন না।

শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ-এর এপিসোড ৪ এপর্যন্তই! মজার একটা পর্ব, উদ্ভাবন আছে, উচ্চাশাও আছে, হালকা একটু হাসিঠাট্টাও আছে! আর কতো অপেক্ষা করবো, পরেরটা কখন আসবে!? 

শার্ক ট্যাংক এপিসোড ৪ প্রোমো- রোবট, ইলেক্ট্রিক কার আর কাউবয় হ্যাট- শার্কদের যুদ্ধে টাকার ছড়াছড়ি!

কী খবর সবার! শার্ক ট্যাংকের মজার দরকষাকষিতে নেমে পড়তে রেডি তো? তাহলে পপকর্ন নিয়ে বসে পড়ুন, শার্ক ট্যাংক এপিসোড ৪ আসছে সবাইকে নিয়ে যেতে দারুণ এক জার্নিতে!

হলিউড, সাবধান থাকো! আমাদের পর্বের শুরুতেই আসছে এক রোবট, যা ওয়াল-ই’কেও হার মানাতে পারে। আমি চাইছি যেন এটা বাটলার হয়, অ্যাডের ব্রেইকে একটা রোবট আপনাকে নাস্তা এনে দিচ্ছে- এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে?! এর পর আছে সেবাসংক্রান্ত একটা ব্যবসা, আমাদের প্রিয় প্রবীণদের জন্য। কে বলেছে প্রযুক্তি হৃদয়হীন? 

আমাদের নির্ভীক শার্ক ট্যাংকের উদ্যোক্তাদের পরবর্তী ব্যবসা একটা রিটেইল ব্র্যান্ড- হয়তো জামাকাপড় নিয়ে? জাপানের সাথে সম্পৃক্ততার ব্যাপারটা বলার পর তো গল্প জমে ক্ষীর! ব্যবসায় পূর্ব-পশ্চিমের মিশেল?  

আচ্ছা, চলুন এখন একটু দিক পালটে “পালকি”র দিকে যাই। পালকি মাত্র ৩% এর জন্য ১ কোটি টাকা চাইছে। নড়েচড়ে বসুন, তারা আসছে ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল) নিয়ে। এটা কুল, কমপ্যাক্ট আর হ্যাঁ, বাংলাদেশের বর্তমান প্রযুক্তি বিবেচনায় বেশ উচ্চাভিলাষী। কিন্তু ভাবুন, স্বপ্ন দেখলে তো বড়োই দেখা উচিত, তাই না?

পালকির ব্যাপারে আরেকটা তথ্য- বিশ্বাস করবেন, তাদের প্রথম দুটো গাড়ী এই বাংলাদেশেই তৈরি হয়েছিলো। এখন তারা আধুনিক ম্যাটেরিয়ালের খোঁজে দেশের বাইরেও যাচ্ছেন। তৈরি থাকুন, শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের চতুর্থ এপিসোডে গাড়ির একটা ঝলক দেখতে পাবেন! 

ওহ হ্যাঁ, আমাদের শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের ক্ষুরধার শার্কদের কথা মনে আছে তো? তাঁদের প্রিয় কাজই হচ্ছে প্রতিযোগীদের সামনে চ্যালেঞ্জ দাঁড় করানো, কঠিন প্রশ্ন করা। একজন আশাবাদী প্রতিযোগীর বিশ্বাস, ১৭ লক্ষ টাকা দিয়ে তার ব্যবসার স্বপ্ন পূরণ হবে।

ওহ আর এসব টেনশানের মধ্যে, আমাদের প্রিয় কাউবয় শার্ক, লিওন হঠাৎ ছুঁড়ে বসলেন আরেক কঠিন প্রশ্ন, “তোমরা কাউবয় হ্যাট বানাও?” দারুণ ছিলো, লিওন, পরিস্থিতি ঠাণ্ডা রেখেছেন! 

তবুও, এই প্রোমো মনে প্রশ্ন রেখেই শেষ হয়, কোনও ডিল কি সত্যিই হবে? মানে, অন্তত একটা তো হওয়া উচিত, না? তৈরি হয়ে যান বন্ধুরা, উত্তেজনা বেড়ে চলেছে! কিন্তু ভাববেন না, আমরা আছি- আগামীকাল সোজা বঙ্গতে চলে যান, ফ্রিতে নতুন এই অ্যাডভেঞ্চার দেখার জন্য! পপকর্ন খেতে খেতে এনজয় করুন এই এক্সাইটিং জার্নি! 

ইংলিশ চ্যাম্পের দুর্দান্ত উদ্যোক্তাদের গোপন জীবন উদঘাটন

হ্যালো, আমার প্রিয় গোয়েন্দারা! রহস্যের সিন্দুকের তালা খুলে ফেলুন, আজ আমরা এক রহস্যময় কোম্পানির ভেতরের গল্পের শুনতে যাচ্ছি। ঠিক ধরেছেন বন্ধুরা! তৈরি হয়ে নিন, আজ আমরা রহস্য উদঘাটন করছি “ইংলিশ চ্যাম্প” এর।  

এরা যেন উদ্যোক্তাদের মধ্যে একটা গুপ্তচরের দল। এদের কাজকর্মের কোনও প্রমাণ এরা রাখে না। কিন্তু তারপরও আমি এই “মিশন ইম্পসিবল” এ নেমে গেছি, এবং জানেন, এরকম এক্সাইটিং কাজ আমি খুব কমই করেছি।

এই রহস্যময় সাম্রাজ্যের ফাউন্ডাররা এমন একটা সময়ে উদ্যোক্তা-জীবন শুরু করেছিলো, যখন আমরা বাকিরা হয়তো মাঠে বা পিসির সামনে খেলতে ব্যস্ত। তাদের একজনের নাম হৃদয়, করপোরেট চাকরি আর নিজের ব্যবসা- দুটোই সমানতালে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি নিজেকে প্রবলেম সলভার দাবি করেন। কেউ যদি সুপারহিরোর অফার করে, হৃদয়ই সেটার প্রথম দাবিদার!  

কাজের প্রতি তাদের নিবেদন মনে দাগ কেটে যায়। সবাই কাজপাগল মানুষ, তাদের ছুটির দিনটাও কাটে কম্পিটিটরদের স্টাডি করতে করতে। পাকা ব্যবসায়ী সবাই! অন্যের উপর নজর রাখা আসলে সবসময় খারাপ না!

আর কাজের ফাঁকে যদি অবসর সময় পাওয়াও যায়, সেটাও কেটে যায় নতুন জ্ঞানের খোঁজে। তাদের অবসর সময়টাকে হয়তো বাকিদের কাছে অবসর মনে না হয়ে কলেজের কোনও লেকচার মনে হতে পারে, কিন্তু এগিয়ে যাবার জন্য তো এটাই দরকার, না কি? এরা হয়তো ওয়ার্ল্ডকাপ ফাইনালের রাতকেও ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি নাইট বানিয়ে দিতে পারে!

চ্যালেঞ্জ তাদের কাছে নেশার মত, নতুন চ্যালেঞ্জ লাগবেই। তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্কটাও চোখে পড়ার মত। সবাই যেন এক ব্যবসায়িক পরিবারের অংশ।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, তারা মেন্টরের খোঁজে এসেছে, কিন্তু যেনতেন কেউ হলে চলবে না। তারা এসেছে সেরাদের সেরা মেন্টর খুঁজতে, অর্থাৎ, আমাদের শার্কদের। ভাববেন যে ইংলিশ চ্যাম্প শার্ক ট্যাংকে টাকার জন্য এসেছে। তাদের জন্য, শার্ক ট্যাংক একটা মুক্তমঞ্চ, যেখানে তারা নিজেদের সেরাটা দেখাবে, প্রশংসা কুড়াবে, আর নেমে পড়বে শার্কদের সাথে ব্যবসার জগতে।  

ইংলিশ চ্যাম্পের উদ্যোক্তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখে নিজের মধ্যেই একটা শক্তি চলে আসে। তাদের ব্যবসার তরী কি ভাসবে, না ডুববে? শোবিজের ভাষাতেই বলতে হয়, “জানতে হলে চোখ রাখুন, আমাদের ‘বিনিথ দ্যা ট্যাংক’ এর পরের পর্বে!”

ওস্তাদ- শেখার আনন্দ ফিরিয়ে আনছে এই উদ্যোক্তারা

অলরাইট, কল্পনা করুন- কুয়েট থেকে পাশ করা কয়েকজন মেধাবী তরুণ একদিন ইন্টারনেটে স্ক্রল করছে, কিন্তু তারা কী দেখছে? মানুষজন যেখান থেকে পারছে অনলাইনের কোর্স কিনছে, কিন্তু তেমন কেউই সেগুলো শেষ করছে না। ঠিক যেন রোববারে ডায়েট শুরু করে সোমবার দুপুরেই শেষ। এই তরুণেরা, এদেরকে ওস্তাদের দলই ডাকছি, তারা ঠিক করলো যে এসব হাল ছেড়ে দেয়া অনেক হয়েছে, এবার এটা ঠিক করার পালা।

আর এখানেই জাদুটার শুরু। “ওস্তাদ,” অনলাইন কোর্স শেষ না করার হতাশা থেকে সৃষ্টি হয়ে যেন একটা ডিজিটাল সুপারহিরোর মত উড়ে এসে বসলো! এর নেতৃত্বে আছে আবদুল্লাহ মুসাব্বির, ফাহিম সিদ্দিকী, মৃদুল খন্দকার, শরিফুল মুবিন এবং সৌরভ বড়ুয়া। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে স্কিল বিল্ডিং বা দক্ষতা তৈরিকে ছেলেখেলার মত সহজ করে তোলা।  

তো, তাদের রহস্যটা কী? লাইভ ক্লাস, বন্ধুরা! ওসব রেকর্ড করা ভিডিও দিয়ে আর কতো? ওস্তাদ আপনাকে ইন্ডাস্ট্রির সব এক্সপার্টদের সাথে যুক্ত করে দেবে, একদম লাইভ। আপনি প্রশ্ন করতে পারবেন বা মিমও শেয়ার করতে পারবেন, যেটা আপনার ইচ্ছা! আর সবচেয়ে সেরা দিক? আপনি আপনার বাসায় আরামে বসেই সব করতে পারছেন।

এখন একটু ট্যাংকে ওস্তাদের পিচের দিকে নজর দিই। তারা এমনভাবে ট্যাংকে এলো, যেন ট্যাংকটা তাদেরই! হবেই না বা কেন? তাদের ছোট্ট শুরু থেকে এগিয়ে তারা আজ বহুদূর। হ্যাঁ, যাত্রায়  বাঁধাবিপত্তি ছিলো, কিন্তু তা তো সবারই থাকে। এটা স্টার্টআপের জার্নিরই একটা অংশ।  

আর তাদের পিচ? একদম স্মুথ! এই ফাউন্ডাররা তাদের বিষয়টা নিয়ে ভালো জ্ঞ্যান রাখে, এটা স্পষ্ট। তাদের প্ল্যাটফর্মটা এ-আই পরিচালিত, এবং খুবই চমৎকার। আর জানেন, ১৬০০০ মানুষ এরই মধ্যে তাদের কোর্স শেষ করে ফেলেছেন! তাদের কমপ্লিশন রেইট হচ্ছে ৯০%! ভাবা যায়! আমি তো এক প্যাকেট চিপসও এক বসায় শেষ করতে পারি না!  

কিন্তু খেলাটা জমেছে আরেক জায়গায়। তারা মাত্র ১.২৫% ইক্যুইটির বদলে চাইছে ১ কোটি টাকা! স্বপ্ন আসলেই বেশ বড়ো! আমাদের শার্করাও পাকা খেলোয়াড়, কঠিন সব প্রশ্ন ছুঁড়তে শুরু করলেন। প্ল্যাটফর্মটা কীভাবে কাজ করে? কে ব্যবহার করছে? আর সবচেয়ে বড়ো বিষয়, ওস্তাদ বাকি সবার চেয়ে কীভাবে আলাদা?

কিন্তু না, ওস্তাদ ভয় পায়নি। তারা সব উত্তর নিয়েই এসেছে, এবং সব বলতেও প্রস্তুত। তারা এক ফাঁকে এই বিশাল খবরটাও দিয়ে দিলো যে তারা ৪০০০ মানুষকে চাকরি পেতে সাহায্য করেছে। এক্সাইটিং, না?

দিনশেষে, সামি, কাজী এবং ফাহিম টোপ গিললেন, ওস্তাদের ৬% ইক্যুইটির বদলে এক কোটি টাকা অফার করলেন। হ্যাঁ, দরকষাকষি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু ব্যবসা তো এমনই! শেষমেশ, ওস্তাদ ডিলটা নিলো, ট্যাংকে ইতিহাস গড়লো, এবং রীতিমতো প্রমাণ করেই ছাড়লো, শেখার ক্ষেত্রে, ওস্তাদের দলের চেয়ে ভালো আর কেউই নেই! 

ডুব দিন শার্কের সাগরে- শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ এপিসোড ৩ রিক্যাপ

কী খবর, প্রিয় উদ্যোক্তা আর দর্শকবন্ধুরা! এই সপ্তাহে চলে এলো শার্ক ট্যাংকের তৃতীয় এপিসোড, আর কী উত্তেজনাটাই না ছড়ালো! তিনজন শার্কের অভিষেক হলো। সাউসান, ফাতিন ছড়িয়ে গেলেন বৈচিত্র্যের তাজা হাওয়া, সাথে ছিলেন কাজী, তাঁর অভিজ্ঞতার বিশাল ঝুলি নিয়ে। কিন্তু ওসব পরে। চলুন আগে দেখি এবার নতুন কী কী ব্যবসা ট্যাংক মাতাতে এলো।  

ইংলিশ চ্যাম্প-
প্রথমেই এলো ইংলিশ চ্যাম্প, দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটা নতুন বিপ্লব ঘটাতে। একটা দারুণ পিচ, উদ্দেশ্যটাও মহান, শার্করা শুরু থেকেই টোপ গিলে বসা। তাদের লক্ষ্য শার্কদের কাছে প্রশংসা পেয়েছে, কিন্তু ভ্যালুয়েশান নিয়ে সবাইই খানিকটা সন্দিহান। একটা জমজমাট দরকষাকষির পর, একটা ডিল হলো, ১৮% ইক্যুইটির বিনিময়ে ২০ লাখ টাকার ইনভেস্টমেন্ট।

ইজি বাজার-
এরপর ট্যাংকে এলো ইজি বাজার, একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীকে ক্ষুধামুক্ত করা এবং ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়ে। শার্করা এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করলেন ঠিকই, কিন্তু এটির বিজনেস মডেল বিবেচনা করে কেউই সামনে এগোননি। কিন্তু তারপরও, সামি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, কথা দিয়েছেন এই উদ্যোক্তাকে সরকারি প্রণোদনা পেতে সাহায্য করবেন, যাতে এই মহতী প্রয়াস বিফলে না যায়।

পার্কওয়ে ফার্নিচার-
স্টাইলিশ এন্ট্রির মধ্য দিয়ে, পার্কওয়ে ফার্নিচার তাদের ট্রেন্ডি এবং একইসাথে সাশ্রয়ী ডিজাইন মঞ্চে তুলে ধরলো। প্রডাক্টের মানের দিকে ব্র্যান্ডের গুরুত্ব দেখে শার্করাও আগ্রহী হয়েছিলেন। সাউসান এবং ফাতিনের যৌথ প্রচেষ্টায়, পার্কওয়ে ১৮% ইক্যুইটির বদলে ৩০ লাখ টাকার বিনিয়োগের একটা ডিল পেতে সক্ষম হলো, সাথে আমাদের শার্কদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা তো আছেই!

ওস্তাদ-
ওস্তাদ, একটি উদ্ভাবনী এডটেক প্ল্যাটফর্ম- চড়া ভ্যালুয়েশানের পরেও শার্কদের আগ্রহ যেখানে কমেনি। জমজমাট একটা দরকষাকষির পর, আমরা দেখতে পেলাম শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড়ো ডিল। এক কোটি টাকার ইনভেস্টমেন্টের বদলে আমাদের শার্করা পাবেন কোম্পানির ৬% ইক্যুইটি। প্রতি ইনভেস্টর পাবেন সরাসরি ১.৫২% ইক্যুইটি, আর বাকি ৪.৪৮% সমানভাগে ভাগ করা হবে অ্যাডভাইজরি শেয়ার হিসেবে। তার মানে, সামি আহমেদ ২%, ফাহিম মাশরুর ২% এবং কাজী মাহবুব ২%।  

আজ এটুকুই বন্ধুরা! এপিসোড ৩ কাটলো টানটান উত্তেজনায়, উদ্যোক্তাদের সফল হবার প্রত্যাশায়। উদ্যমী উদ্যোক্তাদের পুরো জার্নি দেখতে সোজা চলে যান বঙ্গতে। ততক্ষণ পর্যন্ত, স্রোতের বিপরীতে সাঁতরে যান, তৈরি করুন নিজের এক ঢেউ, নিজের এক সত্ত্বা।  

উদ্যোক্তা তরুণীর বিউটি ব্র্যান্ড কাঁপালো শার্ক ট্যাংকের মঞ্চ!

রূপচর্চা নিয়ে দারুণ প্যাশনেট, পঁচিশ বছর বয়সী নাজনিন আখতার ডালিয়া- তার এই প্যাশনকে ব্যবসায় রূপ দিতে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তিনি “বিউটি সল্যুশান” ব্র্যান্ডের “ওয়ান-ওম্যান আর্মি,” একাই সামলে যাচ্ছেন ব্যবসার পুরোটা। আর এবার, ডালিয়া তার পথচলার গল্প আর দুর্দান্ত বিজনেস স্ট্র্যাটেজি দিয়ে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের মঞ্চ কাঁপিয়ে দিয়েছেন! শার্করা এতোটাই মুগ্ধ, যে তার কোম্পানির ৮% ইক্যুইটির বদলে ৫০ লাখ টাকা ইনভেস্ট করেছেন!
ডালিয়ার “বিউটি সল্যুশান” এর শুরু সেই নয় বছর আগে, ছোট্ট পরিসরে। আর আজ, তিনি তিন তিনটা সফল দোকানের মালিক! এই বয়সের একটা উদ্যোক্তার জন্য এটা কতো বড়ো ব্যাপার, ভাবা যায়? আর এখানেই শেষ না, তার প্রডাক্টের লিস্টে এখন ৬০টারও বেশি বিউটি প্রডাক্ট- সবগুলোই অর্গানিক, ক্ষতিকর কেমিক্যালমুক্ত। তার প্রডাক্ট ক্রেতাদের জন্য নিরাপদ আর কার্যকর হবে, এটাই লক্ষ্য।
এখন যে কথাটা বলবো, আজকের এই ডিজিটাল যুগে সেটা শুনে যে কারও মাথা ঘুরে যাবে! ডালিয়া কখনোই ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যবহার করেননি! সত্যি বলছি! তার সেরা মানের প্রডাক্ট, আর লয়্যাল কাস্টমারদের দিয়েই তিনি ব্যবসাকে নিয়ে গেছেন নতুন এক লেভেলে! আর ব্যবসাটা চালাচ্ছেনও সেভাবেই, ৩০% এর বিশাল নেট প্রফিট- বোঝাই যাচ্ছে তার এই ব্র্যান্ড কেমন কাঁপাচ্ছে!
“বিউটি সল্যুশান” এর গোটা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের একটা ১৫০০ স্কয়ারফিটের ফ্যাক্টরিতে। ডালিয়ার এই জায়গাটা নিয়ে একটা বড়ো প্ল্যান আছে। আর সাথে শার্কদের সাহায্য-পরামর্শ মিলিয়ে, তার এই ব্র্যান্ডের আগামী দিনগুলো দারুণ এক্সাইটিং হবে- এটা নিশ্চিত!
ডালিয়ার ব্যবসা নিয়ে আগ্রহ আর প্যাশনই শার্কদের মন জয় করে নিয়েছে। কঠিন পরিশ্রম আর নিজের লক্ষ্য থেকে সরে না আসার এই অদম্য গল্প আমাদেরকেও প্রেরণা দেয়। বাকি সব তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্যও এটা একটা দারুণ উদাহরণ।
নাজনিন আখতার ডালিয়ার এই সাহসী পথচলাই প্রমাণ করে, প্যাশন আর সুস্পষ্ট লক্ষ্য থাকলে, সাফল্য আসবেই। শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের আগামী এপিসোডে আমরা ডালিয়ার মতই আরও উদ্যোক্তা দেখতে চাই, যারা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় না, স্বপ্ন সত্যি করতে হাড়ভাঙা খাটুনি খাটতে ভয় পায় না।

শার্কদের সাথে সাগরে নামতে প্রস্তুত? – বাংলাদেশী শার্ক ট্যাংক আসছে ঝড় তুলতে!

দারুণ খবর! আগামী ২৬ তারিখ বাংলাদেশে শার্ক ট্যাংকের লোকাল সংস্করণ শুরু হতে যাচ্ছে! আমাদের দেশের উঠতি উদ্যোক্তা-সংস্কৃতিতে এই শো একটা ভালো প্রভাব ফেলবে- এই আশায় আগ্রহী হয়ে আছি আমি সহ আরও অনেকেই। আমাদের দেশে যেখানে উদ্যোক্তা হওয়াটাকে অতোটা উৎসাহ দেয়া হয় না- শার্ক ট্যাংক এই পুরো দৃষ্টিভঙ্গি পালটে ফেলতে পারে, লাখো তরুণকে অনুপ্রাণিত করতে পারে উদ্ভাবনের শক্তিতে পরিবর্তন ঘটাতে।

লঞ্চিং ইভেন্ট দেখেই বোঝা হচ্ছে, ব্যাপারটা বেশ জমবে! আমি তো আশায় বুক বেঁধে আছি- এই শো আমাদের ব্যবসার পুরো ইকোসিস্টেমটাকেই ঢেলে সাজাতে পারবে, নতুন একটা জোয়ার আনতে পারবে। কিছু কিছু শার্ক তো বিশাল প্রফিটের ভবিষ্যৎবাণীও করে ফেলছেন। যদিও একমাত্র সময়ই বলতে পারবে তাদের ইনভেস্টমেন্টের তরী ভাসবে না কি ডুববে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, শার্করা এবং বঙ্গের লিডারশিপ- দু পক্ষই বিভিন্ন শ্রেণীর উদ্যোক্তাদের দেখে অবাক হয়েছেন, মুগ্ধ হয়েছেন। শুনে খুব ভালো লেগেছে যে দেশের প্রতিটা কোণা থেকে প্রতিযোগীরা এসেছেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করছেন।

আমি তো অধীর হয়ে দেখার অপেক্ষা করছি, এই উদ্যমী উদ্যোক্তারা কতোকিছুর পসরা সাজিয়ে এনেছেন, আর শার্করাই বা কীভাবে তাদের এক্সপার্টিজ দিয়ে এই ব্যবসাগুলোকে বড়ো করার ব্যাপারে সাহায্য করছেন। শো নিয়ে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে, ফ্যানদের তর সইছে না, কবে হবে প্রিমিয়ার।

আগামী ২৬ তারিখ শার্ক ট্যাংক আমাদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে- এটাই আশা! তারিখটা মনে রাখবেন, বন্ধুরা- শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশ আসছে আগামী ২৬ এপ্রিল, রাত দশটায়, একইসাথে বঙ্গ এবং দীপ্ত টিভিতে! মুগ্ধ হতে প্রস্তুত তো?