শার্ক ট্যাংকের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে- সারা শহর পুড়ছে এই জ্বরে!
হ্যালো বন্ধুরা, শার্ক ট্যাংক এসে পড়েছে শহরে, প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে শহরবাসী, উত্তেজনায় ভরপুর চারপাশ! যেদিকেই তাকাচ্ছি, শার্ক ট্যাংকের নীল রঙে যেন ছেয়ে আছে। মনে হচ্ছে পুরো শহরে আনন্দের বন্যা বইছে, আপনাদেরটা জানি না, আমার কিন্তু দারুণ লাগছে!
চারিদিকে বিরাট সব বিলবোর্ড, চোখ ধাঁধানো ঝলমলে ডিজিটাল ব্যানার। মন চাইছে সারাক্ষণ কোনও পর্যটকের মত উৎসুক চোখ নিয়ে সারা শহর খুঁজে শার্ক ট্যাংকের বিজ্ঞাপন দেখতে থাকি! একটাও মিস করা যাবে না!
আর শুধু আমিই না। আমার বন্ধুরাও আমাকে শহরের আনাচে-কানাচে খুঁজে পাওয়া ছবি পাঠাচ্ছে, এই মার্কেটিং মহাযজ্ঞ দেখে ওরা সবাই মুগ্ধ! আর মুগ্ধ না হয়েও উপায় কই?
এই মহাযজ্ঞের জ্বরে ভুগছি আমরা সবাই। চারিদিকে উৎসাহের কলরব, হাজারও অনুমান, লাখো আলোচনা। শার্ক ট্যাংক এক গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে, যে জোয়ারে ভেসে যাচ্ছি আমরা সবাই!
তো, আপনারাও পপকর্ন নিয়ে সোফায় গা এলিয়ে বসে পড়ুন! আমি প্রস্তুত, আমার বন্ধু আর পরিবার নিয়ে রাত ১০টায় শার্ক ট্যাংকের প্রিমিয়ার দেখতে! আর আমাদের সবার একটাই আশা, শার্ক ট্যাংকের মেঘ যেভাবে গর্জেছে, ঠিক সেভাবেই যেন বর্ষেও! কারণ, যদি সেটা না হয়, শার্ক ট্যাংকের নীল সাগরের বদলে হতাশার সাগরে ডুবতে হবে সব্বাইকে!
দলবেঁধে যোগ দিন এই আকর্ষণীয়, মজার শার্ক ট্যাংকের রোলারকোস্টারে। সবাই রেডি তো, আজকের সফরটা জমবে!
শার্ক ট্যাংকের বর্ণিল বৈচিত্র্য- হাসির বন্যায় ভাসতে প্রস্তুত?
হ্যালো, হ্যালো, হ্যালো! মাত্রই শার্ক ট্যাংকের নতুন এপিসোডের স্নিক পিক দেখলাম। এটুকু বলি, ব্যবসার একটা পাঁচমিশালী আচার কল্পনা করুন, কখনও টক, কখনও মিষ্টি- মোটকথা, এরকম জিনিশ আমরা আগে দেখিই নি। খেলা জমে গেছে, প্রস্তুত হোন অনুভূতির এক রোলার কোস্টার রাইডের জন্য। হাসিঠাট্টা থেকে টানটান উত্তেজনা, প্রতিযোগীদের স্বপ্নের একটা বড়ো অংশ শার্কদের নিয়ে নেবার/কেড়ে নেবার চেষ্টা… নাহ, স্পয়লার দিচ্ছি না!
একজন উদ্যোক্তা ছোট্ট লোভ দেখিয়ে গেলেন- অনেক টাকা খরচ না করেও কীভাবে তার কাছ থেকে স্টাইলিশ ফার্নিচার কিনতে পারবেন। খুব জানতে ইচ্ছা করছে, তাই না? আমি নিজেও আমার সস্তা চেয়ারটাতে বসে অপেক্ষা করছি!
এরপর, এক ভাই চাল, ডাল, আটা, ময়দা সব দিয়ে দিচ্ছেন, কত টাকায় জানেন? মাত্র পাঁচ হাজার! বিষয়টা কি ঘুরেফিরে সেই একই পাড়ার মুদির দোকানের মত, নাকি তারা কোনও রহস্য লুকিয়ে রেখেছেন? থাক, পুরোটা দেখার আগে এতো অনুমান না করি।
“ইংলিশ চ্যাম্প” পুরনো স্মৃতি মনে করিয়ে দিলো- অনলাইন টিচার, ছেলেবুড়ো সবাইকে কোর্স বেচবেন, বাংলাদেশে ইংরেজি বিপ্লব ঘটাবেন, পরিচিত না? ফাউন্ডারের গার্লফ্রেন্ডকে জোর করে কোর্স কেনানোর গল্প শুনে খানিকটা হাসিই পেলো। ওদের টার্গেটটা সহজ, ধরেবেঁধে সবাইকে কাস্টমার বানানো! সামি আহমেদ আর এক খুদে উদ্যোক্তার দৃশ্যটা খুব ভালো লেগেছে- ছেলেটার ঝুলিতে কী আছে তা দেখার অপেক্ষায়…!এসে পড়ুন, পপকর্ন নিয়ে, আর নেমে পড়ুন, ট্যাংকে!
টেক এক্সপার্ট কাজী এবং আরেফিন- নতুন উপায়ে নতুন বিপ্লব
কাজী আশিকুর রসুল আর আরেফিন রাফি, নতুন যুগের পথ দেখানো দারুণ এক “ডায়নামিক ডুয়ো।” একজন আর্টিস্ট যেভাবে সাধারণ পাথরের টুকরো ভেঙে তৈরি করেন অনন্যসাধারণ আর্ট, তারাও একইভাবে পালটে দিচ্ছেন বাংলাদেশের টেক বিজনেসের ভবিষ্যৎ!
শুধু দক্ষ লিডারই নন, তারা পরিশ্রমী, তাদের সাফল্যই সেটার প্রমাণ। কাজীর উদ্যোক্তা জীবনের শুরু সেই কৈশোরে, এরই মধ্যে লিড করেছেন তিন তিনটা কোম্পানিকে/ নেতৃত্ব দিয়েছেন তিন তিনটা কোম্পানিতে! তিনি জাত স্বপ্নদ্রষ্টা, যার মূল লক্ষ্য শুধুই টাকা কামানো নয়, বরং মানুষের চাকরির সুযোগ তৈরি করে দেয়া। সাথে আছেন আরেফিন রাফি- বিদেশের বিলাসের জীবন ফেলে ফিরে এসেছেন, পারিবারিক ব্যবসায় নতুনত্ব আনতে। দুজনের সম্মিলিত টেকনোলজি আর বিজনেসের স্কিল/দক্ষতা নিয়ে তারা প্রস্তুত, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক জাদুর ছোঁয়া আনতে, এটিকে আরও বড়ো করতে।
আর জানেন, শার্ক ট্যাংকে আসাটা এই দুই খ্যাপাটে তরুণের খুব হিশেব করে প্ল্যান করা না। একদমই না! হঠাৎ পাওয়া গুপ্তধনের মতই এক দুবাই ট্রিপে শার্ক ট্যাংক বাংলাদেশের খবরটা তারা পেয়েছিলেন। কিন্তু এমন সুযোগ লুফে নিতে আর সময় নষ্ট করেন নি কেউই!
তো, তৈরি হয়ে নিন, কারণ এই শুক্রবার আমরা যাচ্ছি সোজা বঙ্গ’তে, ঠিক রাত দশটায়! কাজী আর আরেফিন কি সত্যিই বড়ো কিছু নিয়ে আসছেন? শার্কদের মন কি গলবে? ঢাকার এই দুই টেকনোলজি এক্সপার্টদের বিজয়ের পথের জার্নিতে সঙ্গী হোন। এই যাত্রাটা জমবে, বন্ধুরা! বাক্সপেটরা রেডি তো? যাওয়া যাক।
পরিশ্রম, প্রিন্ট, আর বিড়ালের আদর- মিট দ্যা স্টিক-অন গ্যাং
জাস্ট একবার ভেবে দেখুন, এই তরুণেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়েই চাকরির গৎবাঁধা নিয়মটা কীভাবে ভেঙে দিয়েছে! নয়টা-পাঁচটার ট্রেনের পেছনে না ছুটে চড়ে বসেছে উদ্যোক্তা হবার রোলারকোস্টারে। তিন ইয়াংস্টারের কোম্পানি স্টিক-অন- একটা প্রিন্ট অন ডিমান্ড কোম্পানি, ভার্সিটি পেরিয়ে তাদের নিজ বিনিয়োগে খোলা ব্যবসা। যে বয়সে বাকিরা চাকরি খোঁজার দৌড়ে, তারা তৈরি করছে চাকরির সুযোগ! সাবাশ ছেলেরা!
এরা উদ্যমী-উৎসাহী স্বভাবের, চিনেছেন? দুজনের পরিবার ব্যবসায়ী (মানে উদ্যোক্তা হবার ভূত রক্তেই ছিলো!), আর তৃতীয় জনের বাবা-মা আর্টিস্ট। তারা কঠিন পরিস্থিতির সমাধান বের করার এক্সপার্ট, সফল ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্টরা তো এমন মানুষই খোঁজেন, তাইনা? তাদের জন্য আরেকটা প্রশংসা, তাদের এই পরিশ্রমকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অত্যন্ত কুলভাবে দেখাচ্ছে!
তাদের একজনের গল্প খুব মনে ধরলো- মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ফ্যামিলির কঠিন আর্থিক অবস্থার ব্যাপারে বুঝতে পারা। এই বয়সে আমাদের অনেকেরই একমাত্র সমস্যা ছিলো ফেইসবুকে কোন প্রোফাইল পিকচার দেবো, মাইস্পেইসের প্রোফাইলে কোন গানটা দেবো- সেটা নিয়ে কনফিউজড থাকা। ব্যাপারটা ভাবায়, তাই না? কিন্তু যাই হোক, কয়লা পুড়েই তো হীরা বের হয়, ঠিক না?
এখন আসি স্টিক-অন দলের সবচেয়ে বড়ো স্টারের গল্পে। কঠিন সময়ে যে সবাইকে এক সূতোয় বেঁধে রাখে- কিয়ো! নাহ, কিয়ো তাদের সিএফও বা মার্কেটিং এর ভিপি না, কিয়ো হচ্ছে তাদের সবচেয়ে কিউট, সবার আদরের বিড়ালছানা। সিরিয়াসলি, কিয়োকে আমাদের মাসকট বানিয়ে ফেলা যায় না? এতো দেখেও মন ভরছে না!
আমাদের এই “ডায়নামিক ট্রায়ো, সাথে তাদের বিড়াল, এখন নেমেছে শার্ক শিকারে (শার্করা ভয় পাবেন না!)। তারা তাদের বড় স্বপ্নকে আরও বড় একটা বুস্ট দিতে মেন্টরের খোঁজে এসেছে। উদ্যোক্তাজীবনের কঠিন সাগরে দক্ষ সাঁতারু এই শার্কদের কাছ থেকে তারা সরাসরি শিখতে চায়।
আমি অধীর হয়ে ওয়েইট করছি তারা কেমন করে সেটা দেখতে, সাথে যদি কিয়োকেও পিচ করতে দেখা যায়, তাহলে তো সোনায় সোহাগা! দেখা যাবে না বলছেন? আচ্ছা, এখানেই চোখ রাখুন!
শার্ক ট্যাংক এপিসোড ১ –পরিবেশকর্মী, শার্ক এবং সুগার ফ্রি সুপারহিরো: বাংলাদেশী শার্ক ট্যাঙ্ক অ্যাডভেঞ্চার
অলরাইট, বঙ্গতে শার্ক ট্যাংকের লোকাল ভার্সনের প্রিমিয়ার শো আমি দেখেছি। এবং সত্যি বলতে, স্কুলে বায়োলজি ক্লাসে যেভাবে আমরা ব্যাঙের ব্যবচ্ছেদ করতাম, ঠিক সেভাবেই দেখেছি। সিরিয়াসলি, আমি অলরেডি শো টা তিনবার দেখেছি। আর এখন আমি আপনাদের সামনে ফাইন্ডিংস গুলো বিস্তারিত তুলে ধরব ।
প্রথমেই, আসুন প্রোডাকশন কোয়ালিটির কথা বলি। এটি তো একটি বিশাল বড় গ্লোবাল শো, তাই না? তাই, স্বাভাবিকভাবেই, আমরা সবাই দেখতে চাই যে বঙ্গ সেই মান ধরে রাখতে পারে কিনা। কিন্তু মজার বিষয় কি জানেন? রিসোর্স এবং প্রযুক্তির দিক দিয়ে আমরা যে অবস্থায় আছি , আমি বলব বঙ্গ বেশ ভালোভাবেই সেই কাজটা করতে পেরেছে। বলতে চাচ্ছি যে, কে ভেবেছিল বাংলাদেশি ক্রুরা এমন দারুন কিছু করে দেখাতে পারে? শুধু সেট ডিজাইনের কথাই যদি বলি, আয়োজন দেখে মনে হয়েছে এটি বিশাল। হ্যাঁ, উন্নতির জায়গা অবশ্যই আছে, বিশেষ করে ক্যামেরা ডিপার্ট্মেন্টে। কিন্তু ভুলে যেয়েন না, রোম কিন্তু একদিনে তৈরি হয়নি।
এখন, পিচের কথায় আসি! বুকশনারি দিয়ে শুরু হয়েছে, এবং বলতেই হবে, বই পড়ুয়াদের মাঝে তাদের একটি বিশাল ফ্যানবেজ রয়েছে। আমি নিজেও তাদের কাছ থেকে বই কিনেছি। এর পিছনে যে ব্যাক্তিটি আছেন তার পিচ এ শার্ক ট্যাঙ্কের কেউ টুকটাক সাহায্য করে থাকতে পারে কিন্তু তার পিচ ছিলো একদম অন পয়েন্ট, শার্কদের দেখে মনে হচ্ছিলো অত্ উৎসাহী, বিশেষ করে নাজিম ফারহান চৌধুরী এবং সামি আহমেদ। লোভনীয় খাবার দেখলে আমাদের ভেতর যেমন খাওয়ার ইচ্ছা জাগে তাদের দেখেও ঠিক তেমনই মনে হচ্ছিলো। তারা আসলে সাহায্য করার জন্য এক হাত বাড়িয়েই রেখেছিলেন? অনেকটা সেইসব সাহায্যকারী প্রতিবেশীর মতো, যারা চিনি বা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দিয়ে সাহায্য করে, তবে এই ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করেছেন নগদ টাকা দিয়ে।
এরপর, কুকলি, সুগার ফ্রি সুপারহিরো। মানে, আমি ওর প্রোমো ভিডিও দেখেছি ,আমার মনে হয়েছে ও স্বাস্থ্যকর স্ন্যাক্স এর ব্যাটম্যান, যে চিনির ক্ষতিকর দিকগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।ওর প্রোডাক্টের টেস্ট শার্কদের খুব ভাল লাগে। যদিও সামি ডিল করেন নি (প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ), বাকীরা ক্ষুধার্ত শার্কের মতোই আগ্রহ দেখাচ্ছিল… কি বলতে চাচ্ছি বুঝতেই পারছেন! শেষ পর্যন্ত, ওদের একটা সুইট ডিল হয়, এবং আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে , ভবিষ্যতে স্ন্যাক ব্যবসায় কুকলি রাজত্ব করবে ।
এরপর আসে ইকোকাটলার, কাঠ বাশের কাটলারি দিয়ে সজ্জিত একজন পরিবেশ যোদ্ধা। মহৎ একটা উদ্দেশ্য কে সামনে রেখে আগালেও, তাদের ভ্যালুয়েশন… বলা যায়, একটু অপ্টিমিস্টিক। ওদের কোন ডিল হয়নি, কিন্তু তারপরও,, আমরা সবাই পিচিং এবং তার প্রস্তুতি সম্পর্কেতো কিছু শিখেছি, তাই না?
শেষ পিচ, বিউটি সলিউশন। তাদের প্রেসেণ্টেশন দেখে মনে হচ্ছিলো এই জায়গা যেন তার চিরচেনা। ডালিয়া যেন স্থির এক জলতরঙ্গে মাথা উচু করে ভেসে থাকা এক জলপদ্ম এবং শার্করাও তার এন্ট্রি এবং প্রেজেন্টেশন মুগ্ধ হয়ে দেখছিলেন।ওর সেলসের পরিসংখ্যান শার্কদের আগ্রহী হতে বাধ্য করেছে।অ্যান্টিক পন্যের নিলামে যেমন বিডিং এর ঝড় বয়ে যায় , স্কিনকেয়ার পন্যের জন্য শার্করা সেভাবেই ডিল করেছেন ।
সামগ্রিকভাবে, প্রথম পর্বটি ছিল উদ্যোক্তা এবং অদ্ভুত সব নেগোসিয়েশনের একটা রোলারকোস্টার,আর আমি প্রতিটি মিনিট দারুণ উপভোগ করেছি। আপনি যদি এখনো না দেখে থাকেন তাহলে আর দেরি করবেন না । এখনই চলে যান বঙ্গ”তে আর দেখে ফেলুন শার্ক ট্যাংক। আমি নিশ্চিত, আপনাদের ভালো লাগবে।